সব সাধকের বড় সাধক…”

সয়াবিনের দাম কত বাড়লো, কোন বিভাগের না কি হলো কিংবা ক্রিকেটে গত ম্যাচের চেয়ে কত রান বেশি করলো বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম? – এসব প্রশ্নের উত্তর জানার কৌতুহল তাদের নেই।
ফেসবুক তাদের নামটা পাল্টাচ্ছে কেন? কোন চ্যানেল ভাইরাল ভিডিও বেশি বানায়? এসব তারা বুঝেনা! খ্যাঁত!

শেয়ার বাজারের সূচক কেন ক্রমাগত কমছে? ডলারের দাম হঠাৎ বাড়লো কেন? – এসব জেনে দেশের জিডিপি বাড়ানো যায়না – এ রকমই ভাবেন দেশের একটা গোষ্টী। বলতে পারেন- এরূপ অসচেতন মানুষ কীভাবে দেশের কাজে আসবে?
প্রশ্নটা করতেই পারেন।

কিন্তু এসব না জেনেও দেশের জিডিপিতে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখা গর্বিত নাগরিক এ দেশের কৃষক সমাজ। রোদ বৃষ্ট ঝড় উপেক্ষা করে দিনের পুরোটা সময় অনেকটা ‘অমানুষিক’ পরিশ্রম করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফসল উৎপাদর করেন যারা, তারা আমাদের কৃষক।

কবির ভাষায়,
“সব সাধকের বড় সাধক আমার দেশের চাষা,
দেশ মাতারই মুক্তিকামী, দেশের সে যে আশা।”

নীরবে দেশের মানুষের মুখে দুমুখো ভাত তুলে দিতে কঠোর পরিশ্রম করা মানুষেরা নিজেরাই দিনের বেলা ভালো করে খাওয়ার সময়ই বা কী পান? না। পান না।
বর্ষায় বেশির ভাগ সময় পানিতে নিমজ্জিত কৃষিভূমিতে কোন রকম লবন, পোড়া মচির দিয়ে পান্তা ভাত।খেয়ে, পারলে আবুল বিড়ি বা কারিগর বিড়ি টেনে আবার কাজে নেমে পড়েন এসব উৎপাদনবান্ধব, জিডিপিবান্ধব প্রকৃত দেশপ্রেমিকেরা।
কবি বলেন,
“দধীচি কি তাহার চেয়ে সাধক ছিল বড়?
পুণ্য অত হবে না ক সব করিলেও জড় ।
মুক্তিকামী মহাসাধক মুক্ত করে দেশ,
সবারই সে অন্ন যােগায়, নাইক গর্ব লেশ। ”

দেশের বড় নেতাদের সাথে ছবি তুলে পোস্টারর বা ব্যানার টাঙিয়ে দেয়ার বা ফেসবুকে দেয়ার তাড়া নেই তাদের। তারা আছে আপন মনে, সাধন রণে। আপন সাধনায়।

আমার সোনার বাংলা, আমা তোমায় ভালোবাসি’- সংগীত আমরা মুখে ধারণ করি। কৃষকেরা ধারণ করেন অনাতরে, তাদের কাজে, মনে, প্রাণে।
“আমার দেশের মাটির ছেলে, নমি বারংবার
তােমায় দেখে চূর্ণ হউক সকল অহংকার। ”

আজ দ্রব্যমূল্য উর্ধ্বগতিতে। শুধু বাংলাদেশে নয়, অনেক দেশে এ সংকট। এ অবস্থায় কৃষকেরা যদি কোনদিন নিজেদের কাজ বন্ধ করে দিয়ে আমাদের অনেকের মতোই কৌতুহলী দর্শক হতো, তাহলে অনেকের উনুনে জ্বলতোনা আগুন, অনেক দুঃস্থের জুটতোনা কোন বেলা ভাত!

আসুন, আমরা কৃষকদের প্রাপ্য সম্মান দিই। তাদের সন্তানদের সহয়াতা করি। তাদের ফসলের ন্যায্যমূল্য দিই।
কৃষক বাঁচলেই বাঁচবে দেশ।


মোঃ নাজিম উদ্দিন
অক্টোবর ২২, ২০২১

 

 

লেখাটি লিখেছেন