তোষামুদে সমাজে উপরে উঠার তাড়া!
সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে আজ তোষামুদি জনতার সংখ্যাধিক্য উপস্থিতি; কি আত্মীয়তায়, কি সম্পর্কে, কি সমাজ-চারিতায়, কি পেশায়- কি-ব্যবসায়-
কি রাজনীতি-কি সমাজনীতি – কি কর্পোরেট- এসএমই-
সর্বত্র আজ তৈলবাজদের জয়জয়কার!
আপনি যাকে একসময় মনে করতেন ব্যক্তিত্বে সুষমাময়, পরমুহূর্তে কোন একসময় তার তোষামুদের গল্প নিজেকে বোকা ভেবে নিজের বোকামির জন্য নিজেই হতবুদ্ধি হবেন!
যে যে উপায়ে তোষামোদ বা চাটুকারিতা প্রকাশ পায়- তা আগের চেয়ে অনেক পণ্যময়, নয় বরং ডিজিটাল স্পর্শে আধুনিক!
ফেইসবুকের সুবাদে তার কিয়দ চিত্র আমরা দেখতে পারি বৈ কি! তোষামোদের উৎকর্ষ, সেসব সেলিব্রেটি (!) বা উদ্দিষ্ট ব্যক্তিত্বের (!) সাথে সেলফি সহ ভার্চুয়াল চাটুকারিতার সস্তা দৃশ্য দেখে লাইক বা ‘রিএকশন’ হয়ত আমরাও দিয়ে থাকি,সজ্ঞানে, কিন্তু নিজেকে বিকিয়ে দেয়া সেসব বৈষয়িকভাবে “সফল” ব্যক্তিদের এসব কার্যক্রম লক্ষ্য করে তাদের প্রতি আপনার অলক্ষ্যেই যে ঘৃণাবোধ জন্মে, তা ডালপালাঙঙ বৃদ্ধি পাবে দিনদিন- নিঃসন্দেহে!
আপনি পারেন না, তা তাদের দৃষ্টিতে আপনার অযোগ্যতা! “ভাই,এ যুগে এসক ছাড়া কি উপরে উঠা যায়?”- এ পরামর্শও ইনস্পিরেশনাল বা মোটিভেশনাল স্পীচের মত চারপাশে ভালই বাড়ছে..
তবে উপরে উঠার এসব সিঁড়ি কি যথাসময়ে নিচে নামার ক্ষেত্রে আদৌ সহায়ক হবে??
প্রাসঙ্গিক কিনা জানিনা, একটা ছোট ঘটনা মনে পড়ল-
বছর খানেক আগে অফিস সহকর্মী -বন্ধুকতক মিলে খৈয়াছড়াসহ মিরশ্বরাই বেল্টের কিছু অনিন্দ্য সুন্দর ঝর্ণা-পাথর-খালের প্রাকৃতিক সহাবস্থানের মোহনায় গিয়ে একের পর সুন্দরম ঝর্ণা দেখতে সুউচ্চ পাহাড় বেয়ে উঠার মধুর কষ্টে পড়তে হল। একটা উচু পাহাড়ে উঠতে গিয়ে দেখলাম, কোনভাবে উঠতে পারলেও নামা খুব কষ্টের হবে। তাই না দেখার কষ্ট বুকে চেপে নিচেই রয়ে গেলাম!
জীবনের সেই উঠতে না পারা উচ্চতায় হয়ত কবি John Keats বর্ণিত “Unheard music” এর মতই “sweeter” বা অদেখা ভুবনের মত সুন্দরতর সৌন্দর্য, তবে উপরে উঠে নিচে নামতে না পারার যন্ত্রণা Tennyson এর Tithonus চরিত্রের মত বৈ কী!!!!
জীবন একটাই!
#Disorganized #Thoughts!
(লেখাটি ২০১৭ সালে লেখা। তবে প্রাসঙ্গিকতা যেন আজকেও বর্তমান)
–
মোঃ নাজিম উদ্দিন