অন্তরে, না অন্দরে?
অন্তরে বাস না থাকিলে অন্দরে বাস থাকিয়া কী হইবো?
– এমন প্রশ্ন অন্তরের বন্দরে উঁকি দেয় প্রায়শই, ইদানিং।
সম্পর্কের যাত্রায় জালালুদ্দিন রুমির একটি কথা প্রায়শই মনে পড়ে:
“এটা তোমার পথ,তোমার একার,অনেকেই তোমার সাথে হাঁটবে কিন্তু কেউ তোমার জন্য হাঁটবেনা”।
আপনি অপরের আলপনায়, নাকি কল্পনায়, আপনার উপস্থিতি অপরের মুখভঙ্গির কোন অংশ প্রভাবিত করে? কপাল নাকি কপোল? সেটা মাঝে মাঝে ভাবা উচিত মনে হয়।
অনেকটা সাদাসিদে ভঙ্গিমায় বললে বলা যায়, প্রিয়জন নাকি প্রয়োজন?
কিছুটা cynical বা ইঙ্গিত দিয়ে বললে, option নাকি priority?
মুখের সব কথা সবাইকে বলা যায় না। বারণ করেছেন প্রিয় নবীজিও।
সঙ্গদোষে লোহাও ভাসে। কথাটা সত্য, আপেক্ষিকও।
অনেক মানুষের ভীড় দেখা যায় সর্বত্রই। জীবনে, মরণেও। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জানাজায় যত মানুষ দেখবেন, কুলখানি বা মৃত্যুপরবর্তী ভোজনে তার বহুগুণ মানুষের উপস্থিতি থাকবে।
বিশ্ববিখ্যাত কবি, লেখক William Shakespeare তার Hamlet নাটকের একাংশে কিছু উপদেশবাণী দিয়েছেন, যার প্রাসঙ্গিকতা বা আবেদন বহু বছর পরও সমানভাবে প্রযোজ্য। তিনি বলেছেন,
“Be thou familiar, but by no means vulgar.
………………………..
Give every man thine ear, but few thy voice:
Take each man’s censure, but reserve thy judgment.”
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর “বোঝাপড়া” কবিতার একাংশে যেন চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন ভাবনাটিঃ
“কেউ বা তোমায় ভালোবাসে
কেউ বা বাসতে পারে না যে,
কেউ বিকিয়ে আছে, কেউ বা
সিকি পয়সা ধারে না যে,
কতকটা যে স্বভাব তাদের
কতকটা বা তোমারো ভাই,
কতকটা এ ভবের গতিক –
সবার তরে নহে সবাই “…
সর্বক্ষেত্রে ভাবনাটা যেন একই। যেন একই ভাবনা জিজ্ঞাসিব জনে জনে-
-অন্তরে বাস না থাকিলে অন্দরে বাস থাকিয়া কী হইবো?
—-
মোঃ নাজিম উদ্দিন
২৫ জুন ২০২১