জুমা দিবসের ভাবনাঃ ৫ঃ ‘ফিরে যেতে হবে…’
—
স্বপ্ন, সাধনা, সংকল্প নিযে প্রতিনিয়ত ছুটছে মানুষ: এ ভবালয়ে করছে আলয়,
নির্মাণ করছে সৌধ, ভবন, অট্টালিকা: যেন এসবে থাকবে অনন্তকাল, বহুদিন!
কিন্তু বাঁধ সাধে ”রাজেউন”- ফিরে যেতে হবে!
যেন এক জগত থেকে বেড়াতে আসা বা কিছুকালের মেহমান হিসেবে এ দুনিয়ায় আসা! বলা হয়, দুনিয়া আখিরাতের শস্যক্ষেত্র..মৃত্যুর মাধ্যমে ক্ষণস্থায়ী এ জীবনের পরিসমাপ্তি।
পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে,
‘কুল্লু নাফসিন জায়িকাতুল মাউত, ‘প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে’।
আমাদের এ মৃত্যু আমাদের গমন বা যাত্রা নয়, বরং ফিরে ফিরে যাওয়া। পবিত্র কোরআনে ৩০ বারেরও অধিকবার “রাজেউন” প্রকৃতির শব্দ দিয়ে বলা হয়েছে, “ফিরে যাওয়ার কথা”…
সারকথা,…. ‘তোমাদেরকে ফিরে যেতে হবে’…..তার অর্থ হচ্ছে, আমরা একটা স্থানে ছিলাম, নির্দিষ্ট পরিক্রমায় পৃথিবীতে এসে পুনরায় মৃত্যুর পর নিজের homeground এ ফিরে যাবো, আজ বা যেকোন দিন-যেদিন বেঁধে দেয়া সময়সীমা পরিপূর্ণ হবে।
আসার সময় আমাদের একটা বয়সক্রম বা জ্যেষ্ঠতা থাকে, দাদার পর বাবা আসে, বাবার পর সন্তান। কিন্তু “ফিরে যাওয়া” সময় কোন বয়সক্রম বা জ্যেষ্ঠতা মানা হয় কী?
আর সেটাই জীবনের উপর মৃত্যুর চ্যালেঞ্জ!
‘জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথা কবে’—এটাই অনিবার্য নিয়তি। একমাত্র মহান আল্লাহ ছাড়া কেউ চিরন্তন নয়।
নির্ধারিত সময়ে মৃত্যুর দূত হামলে পড়ে। অল্প ক্ষণের পৃথিবীতে কেউ স্থায়ী নয়।
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘প্রত্যেক প্রাণিকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। আর কেয়ামতের দিন তোমাদের পরিপূর্ণ প্রতিদান দেওয়া হবে।
তারপর যাকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে,সেই সফলকাম। আর পার্থিব জীবন ধোঁকার বস্তু ছাড়া কিছুই নয়।
(সুরা আল ইমরান, আয়াত : ১৮৫)
আরো ভয়াবহভাবে বলা হয়েছেঃ ‘তোমরা যেখানেই থাক না কেন মৃত্যু তোমাদের নাগাল পাবেই; এমনকি সুউচ্চ সুদৃঢ় দুর্গে অবস্থান করলেও।’
(সুরা নিসা, আয়াত: ৭৮)।
ফিরে যেতে হবে: সরবে বা নিরবে: কেউ যাবেনা সাথে, যেতে হবে একা, নিজের সাথে!
এ কথা অনুধাবনের মাত্রার উপরই নির্ভর করে মুসলমানদের জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতা..
আল্লাহ আমাদের সঠিক জ্ঞান করুন।
—
মোঃ নাজিম উদ্দিন
ডিসেম্বর ৮, ২০২৩