তখন আমি চট্টগ্রামের একটি স্কুল (স্কুল এন্ড কলেজ) এর শিক্ষক। মাষ্টার্স পরীক্ষা সবেমাত্র শেষ হলো। স্কুলের ইংলিশ মিডিয়াম শাখার প্রধান ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ শ্রদ্ধেয় এম,এ হাসান স্যার। চলনে, বলনে আচরণে পুরোপুরি “ইংলিশ” স্টাইলের, চলনের এ সুদক্ষ-কর্মঠ প্রশাসকের সব ক্ষেত্রে পারদর্শিতা কর্মজীবনে সদ্য প্রবেশের চেষ্টারত এই উৎসুকের মনে স্থান নেয়ার জন্য যথেষ্টই ছিল।
ফেব্রুয়ারি মাস। স্কুলের দেয়ালিকা প্রকাশ হবে। লেখা আহবান হল। লেখা জমা পড়েছে কম। তাগাদা অনেক। জমাদানের শেষ তারিখের দিকে আমি ছোট একটি স্বরচিত কবিতা দিয়ে প্রশ্নবান থেকে বাঁচার চেষ্টা করলাম।
শেষদিন ক্লাসশেষে টিচার্স মিটিং ডাকলেন। মিটিং এর এক পর্যায়ে তিনি বলে উঠলেন, আমি বাংলা সাহিত্যের ছাত্র। আমার মত যে কয়জন শিক্ষক স্যারকে ইংরেজির ছাত্র ভেবেছেন, তারা তো বিস্মিত! যাক, স্যার এবার বলে উঠলেন, এখন আমি একটি কবিতা আবৃত্তি করব। অনুপ্রেরণা পাওয়ার মত কিছু কথার পর শুরু করলেন অামার লেখা কবিতা (চেষ্টামাত্র) আবৃত্তি! আমার লেখা চাইপাশ কবিতাও প্রথম কেউ আবৃত্তি করছেন- তাও এত সুন্দর বচন-বাচনে!
আমি নিশ্চিত ছিলাম, তিনি আমার প্রেরণার জন্য কাজটি করেছেন; সেই হিসেবে কবিতাটি নিজের সংরক্ষণে রেখেছি সেই ২০০৬ সাল থেকে!
#একুশ থেকে একাত্তর
একুশ মোদের প্রথম প্রহর
প্রেরণার বাতিঘর
বায়ান্ন হতে সকল রণে
নবযুগের দোসর।
একুশ তুমি দেখালে পথ
৫৪ নির্বাচন জয়
তোমা হতে সাহসী অভ্যুত্থান
দেখাইলে প্রত্যয়।
৭০ এর প্রভূত বিজয়
সৃজিল তব মিনার
রক্ত নিয়ে দিলে স্বাধীনতা
দূরিলে শাসন মিথ্যার।
একুশ সে-তো একাত্তরের
মুক্তিসেনার প্রেরণা;
বাংলা-বিশ্ব তব বন্দনায়
তুমি অনন্ত যৌবনা।
(ফেব্রুয়ারি ২০০৬)
মূলতঃ
একুশ একটি প্রেরণা,
অনুপ্রেরণার উৎসমূল।
একুশ এক বীজতলার নাম
যা সৃজন করে, বিস্তার করে।
একটি মোম-চেরাগের নাম
যা প্রজ্জ্বলন করে শত মশাল;
একুশ যেনো একটি ঊষা
যাতে দিশা পায় কাল-কালান্তর!
একটি রক্তাক্ত দিনের নাম
যাতে লুকানো কত ইতিহাস।
একটি যৌবনের নাম
যার উত্তরাধিকার অজুত প্রজন্ম…
মো. নাজিম উদ্দিন:
Nazim3852@gmail.com
২০-০২-২০১৮