পরিবর্তনে শেখ হাসিনা

(জন্মদিনে শুভেচ্ছাসহ)

শাহিদা আকতার জাহান

——–

পরিবর্তন, সাহসী, সততায় এক বিপ্লবের নাম বিশ্বের জননন্দিত শেখ হাসিনা। তিনি বার বার বুলেট গ্রেনেডের ও গুলির মুখ থেকে বেঁচে ফেরা বহ্নিশিখা। তিনি পিতা বঙ্গবন্ধু মতো তাঁর পুরো জীবন বাংলার দুখি-মেহনতী মানুষের কল্যাণে আন্দোলন সংগ্রামে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। রাজনীতির মাধ্যমে মানুষের কল্যাণ, অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া, অন্যায় থেকে মুক্ত করা তার রাজনীতির দর্শন। দীর্ঘ একুশ বছরের কণ্টকাকীর্ণ রাজনীতির ধূম্রজাল থেকে বাংলাদেশকে আলোকিত পথের দিশা দেখানোর কাজটি অনেক সুকঠিন ছিল। তবুও অনড় ছিলেন অদম্য সাহসী শেখ হাসিনা। তিনি জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন নতুন এক আশার স্বপ্নে জাগিয়ে তুলেছেন। সেই আশার নাম রূপকল্প-২০২১, আর রূপকল্প ২০৪১। তাঁর নিরলস সংগ্রম, আক্লান্ত পরিশ্রমে বাংলাদেশ ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ থেকে একটি মধ্য আয়ের দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে যেমন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ তেমনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একটি উদার গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা, উন্নয়ন বাংলাদেশের মুগ্ধ প্রতিচ্ছবি। শেখ হাসিনার রাজনীতির জীবন আদর্শের মূলমন্ত্র হলো বাংলার মানুষের জীবনমান উন্নয়ন, দুঃখী, শ্রমিক, দিনমজুর মেহনতি মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, বাংলার প্রতিটি মানুষের সুখী-সমৃদ্ধ জীবন নিশ্চিতকরণ। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত শেখ হাসিনার বিপুল জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্তিত হয়ে স্বাধীনতা বিরোধী বিএনপি জামাত, রাজাকার স্বৈরশাসক, রাজনৈতিক অপশক্তি তার উপর বুলেট ও গ্রেনেড হামলা চালিয়ে বারবার তাঁকে ও তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের শেষ করে দিতে চেয়েছে। প্রতিবারই মহান আল্লাহ রহমতে, দুঃখি জনগণের ভালোবাসা দোয়ায় নিশ্চিত মৃত্যুর দুয়ার থেকে বেঁচে ফিরেছেন বাংলার মানুষের ভাগ্যন্নোয়নের জন্যই।
বার-বার মৃত্যুর কাছ থেকে ফিরে আসা শেখ হাসিনা জনগণের কাছে শুধু একটি স্বাধীন দেশের প্রধানমন্ত্রীই নয়, তিনি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি ও নয়, তিনি একজন সাহসী বিশ্বনন্দিত রাষ্ট্রনায়ক। আর একটি দেশের চরম দুর্দিনে গণতন্ত্রের, ভোটের-ভাতের অধিকারের কাণ্ডারি।

শেখ হাসিনা অমিত তেজের সাহসী রাজনৈতিক নেতা। তাঁর সততা, দক্ষতা, বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের কাছে প্রশংসনীয় একটি নাম। তাই বলা যায় Bangladesh is growing in the vision of Bangabandhu under the strong leadership of Sheikh Hasina. শেখ হাসিনার আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য দূরীকরণে তার অবদান বর্তমান বিশ্বের কাছে অবিস্মরণীয়। তিনি দেশের জনগণের জন্য নিজের জীবন বাজি রাখতে পারেন নির্দ্বিধায়, সহজে দুঃখি মেহনতি মানুষকে আপন করে নিতে পারেন। কোনো একজন অর্বাচীনকে মুখের ওপর কঠিন সত্য কথাটা বলে দিতে পারেন – have forgiven but not forgotten. এমন সত্য অকপটে উচ্চারণ করতে সততা, শক্তি, সাহস লাগে যেটি তিনি পেয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও অগ্নর্গভা বঙ্গমাতা ফজিলাতুনেচ্ছে মুজিবের কাছ থেকে। দেশের গণতন্ত্রের জন্য বারবার মৃত্যুর ভয়কে উপেক্ষা করে দেশের সাধারণ মেহনতি মানুষের জন্য কাজ করে যাওয়া বর্তমান বিশ্বে বিরল একটি সাহসী নাম। ধ্বংসস্তুুপ ও শত্রুর আগুনের ছাই থেকে উঠে আসা এক বীরকন্যা, যিনি একাই নিজের যোগ্যতা, দক্ষতা, সততার সাথে একটি দেশকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন।

বাংলাদেশের মানুষ পরম সৌভাগ্যবান, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে এদেশের মানুষ ভিশনারী, স্বপ্নরাজ কর্মঠ, অত্যন্ত সৎ ও সাহসী এমন বিরল নেতা পেয়েছেন। তাঁর অসাধারণ নেতৃত্বে বাংলাদেশকে বিশ্ব পরিমণ্ডলে অন্যরকম উচ্চতায় প্রতিষ্টিত করে যাচ্ছেন। দেশকে কিভাবে দ্রুত এগিয়ে নেওয়া যায় তা শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্ব দেখলেই বুঝা যায়। নারীর ক্ষমতায়ন, অর্থনৈতিক উন্নতি, স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষায় সমুজ্জ্বল। নির্যাতিত নিপীড়িত, যুগ যুগ ধরে অধিকার বঞ্চিত ১১ লক্ষাধিক রোহিঙ্গাকে সাহসিকতার সাথে আশ্রয় দিয়ে বিশ্বে মানবতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন শেখ হাসিনা। ১৫ আগস্ট হত্যাকান্ডের পর তিনি ৬ বছর নির্বাসনে পর ১৯৮১ সালে তাঁর দেশে ফিরে আসা ছিলো গণতন্ত্রের ফিরে আসা, ভোটের অধিকার ভাতের অধিকার দেশের উন্নয়ন ও প্রগতির ফিরে আসা সেই সাথে অনির্বাচিতভাবে ক্ষমতাসীন স্বৈরাচারী সরকারের বিদায় হাওয়া। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর অন্ধকারে চলা, স্বৈরাশাসকের অবৈধভাবে ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের রাজনীতির মাঠ কখনো শেখ হাসিনার জন্য মসৃন ছিলো না। এক বন্ধুর পথে শেখ হাসিনাকে পথ চলতে হয়েছে। ১৯৭৫ সালের পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে কখনো স্থিতিশীলতা আসেনি, দেশ ছিলো দুঃশাসনে, দুঃনীতিতে নিমজ্জিত। সে নিমজ্জিত বাংলাদেশকে আজ উন্নয়নের বাংলাদেশ হিসেবে বিশ্বদরবারে উপস্হাপন করেছেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের ইতিহাসে কোন নির্বাচিত বা অনির্বাচিত শাসক শেখ হাসিনার মত টানা তৃতীয় বার ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। বহিঃবিশ্বের কাছে বাংলাদেশ এক উদীয়মান শক্তি হিসেবে উত্থান লাভ করেছে শেখ হাসিনার দৃঢ় বলিষ্ঠ নেতৃত্বে। এই ৭৩ বছর বয়সেও, তাঁর কাছে দেশের মানুষের উন্নয়নের চেয়ে বড় কিছু নাই।

শেখ হাসিনার প্রয়াত স্বামী ডঃ এম ওয়াজেদ মিয়া ছিলেন একজন স্বনামধন্য পরমাণু বিজ্ঞানী। ডাকনাম সুধা মিয়া। ১৯৪২ সালে ১৬ ফেব্রুয়ারি রংপুর পীরগঞ্জ উপজেলার ফতেহপুর গ্রামে জম্নগ্রহণ করেন। বাবার নাম আব্দুল কাদের মিয়া এবং মা ময়েজুন্নেসা।

চককরিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করে, রংপুর জেলা স্কুলে ভর্ত্তি করানো হয়। সেখান থেকে তিনি ডিস্টিংশনসহ প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন, ১৯৫৮ সালে রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞান ভর্তি হয়ে ১৯৬২ সালে পদার্থবিজ্ঞানে এমএসসি পাস করেন। ১৯৬৩ সালে সালে তৎকালীন পাকিস্তান আণবিক শক্তি কমিশনের করাচিস্থ প্রধান কার্যালয়ে বৈজ্ঞানিক কর্মকতা হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৩-৬৪ শিক্ষা বছরে লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজ থেকে ‘ডিপ্লোমা ইম্পেরিয়াল কলেজ কোর্স’ কৃতিত্বের সঙ্গে সম্পন্ন করেন। ১৯৬৭ সালের আগস্ট মাসে তিনি লন্ডনের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইডি ডিগ্রী লাভ করেন। দু’সময়ে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সাথে ওয়াজেদ মিয়া ও বাংলাদেশের ইতিহাসের অংশ।

শেখ হাসিনার এক ছেলে, এক মেয়ে। বড় সন্তান পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে গৃহবন্দি অবস্হায় জম্নগ্রহণ করেন। ৩০শে জুলাই মা শেখ হাসিনার সাথে জার্মানে অবস্হানরত বাবা ডঃ ওয়াজেদ মিয়ার কাছে থাকায় তারা বেঁছে যান। ৭৫-এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার পর মা শেখ হাসিনা ও বাবা ডঃ ওয়াজেদ মিয়া জার্মানি, লন্ডন হয়ে ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয়ে ছিলেন দীর্ঘ ৬ বছর। জয়ের শৈশব এবং কৈশোর কেটেছে ভারতে।তিনি ঢাকায় ধানমন্ডিস্থ স্কলাসটিকা অব টেক্সাস অ্যাট অ্যালিংটন থেকে কম্পিউটার বিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রী নেন। নৈনিতালের সেন্ট জোসেফ কলেজ হতে স্নাতক সম্পন্ন করেন।পরবর্তীকালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোক-প্রশাসন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন।২০১৪ সালের ২০ নভেম্বর থেকে তিনি আমৃত্যু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক অবৈতনিক উপদেষ্টা পদে দায়িত্বে ছিলেন। অন্যদিকে, কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলও মায়ের মতো সৎ সাহসী, মানুষের প্রতি গভীর ভালোবাসা, মুুক্তিযোদ্ধের চেতনা, বঙ্গবন্ধু আদর্শ ধারণ করে দীর্ঘ দিন ধরে দেশে-বিদেশে মানব কল্যাণে কাজ করে যাছেন। ১৯৭২ সালে ৯ ডিসেম্বের জম্ন গ্রহন করেন। তিনি একজন প্রখ্যাত অটিজম বিশেষজ্ঞ।

১৯৯৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনোবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রী, ২০০২ সালে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজির ওপর মাস্টার্স ডিগ্রী, ২০০৪ সালে স্কুল সাইকোলজির ওপর বিশেষজ্ঞ ডিগ্রী লাভ করেন। ২০০৮ সাল থেকে শিশুদের অটিজম এবং স্নায়বিক জটিলতা সংক্রান্ত বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। ২০১৪ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্হা ‘হু অ্যাক্সেলেন্স অ্যাওয়ার্ড-এ ভূষিত হন।

শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে দেশে এসে সেই থেকে ১৯৯০ সাল থেকে ১৯৯৫ পর্যন্ত দীর্ঘ ১৪টি বছর জনগণের মানবাধিকার আদায়ের জন্য রাজপথে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন সামরিক স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে।
১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামীলীগ হয় প্রধান বিরোধী দল। আবার শুরু হয় নির্যাতন-নিষ্পেষণ, হত্যা খুন-গুম।

অনেক আন্দোলন সংগ্রামের পর ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে দেশের অনেক দিনের জমে থাকা গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো করেছেন শেখ হাসিনা। ১৯৯৮ সালের বন্যার সময়, তাঁর সরকার ২ কোটি বন্যা দুর্গত মানুষকে বিনামুল্যে খাদ্য প্রদান করে। তাঁর নেতৃত্বাধীন সেই সরকারের আমলে উল্লেখযোগ্য সাফল্যসমুহের মধ্যে একটি হচ্ছে, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ১৯৯৬ থেকে ২০০০ ছিলো এককথায় উন্নয়নের স্বর্ণযুগ। বাংদেশের দুঃসহ অবস্হার অবসান ঘটে। ৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামীলীগ সরকারের গৌরবোজ্জ্বল সাফল্যগাঁথা স্বর্ণযুগ হিসেবে চিহৃিত হয়ে আছে। আইনের শাসন মানবাধিকার প্রতিষ্টার লক্ষ্যে কুখ্যাত ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স বাতিল, সুশাসন প্রতিষ্টা, নারীনীতি প্রণয়ন নারীর ক্ষমতায়ন, সমাজ, অর্থনীতি শিক্ষা-সংস্কৃতিসহ সর্বক্ষেত্রে পুনঃপ্রতিষ্টিত হয় মুুক্তিযোদ্ধের ধারা। এই সম্ভাবনার অপমৃত্যু হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মদতে সূক্ষ্ম কারচুপির ও কারসাজির ফলে ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিজয়ে ফসল ছিনতাই হয়ে যায়। প্রশ্নবিদ্ধ হয় নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার। রাষ্ট্রক্ষমতায় প্রতিষ্টিত হয়ে বিএনপি-জামাত জোট তাদের পাঁচ বছরের দুঃনীতি দুঃশাসনে বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণিত করে।হত্য,সন্ত্রাস খুন ঘুম সরকারের পৃষ্টপোষকতায় জঙ্গীবাদের বাংলাদেশ হয়ে উঠে মৃত্যুর উপত্যকায়। হিন্দু মুসলমান নির্বিশেষে শত শত নারী এবং শিশু-কিশোরী হয় গণধর্ষণের শিকার।সাংবাদিক, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, সংস্কৃতিকর্মী, কৃষক,শ্রমিক কেউই জোট সরকারের রাজনৈতিক ও ফ্যাসিস্ট হামলার হাত থেকে রক্ষ পায়নি।

২০০১ থেকে আবারো জাতির ইতিহাসে কালো অধ্যায় শুরু হয়। বিএনপি-জামাত জোট ক্ষমতায় আসে।এই সময়েই আবার জঙ্গীবাদ মাথা চাড়া দিয়ে উঠে, ৬৪ জেলায় এক সাথে বোমা মারে। বিভিন্ন সময়ে আদালত, সিনেমা হল মেলা, দরগাহ, মসজিদ, গীর্জা, মন্দির, অফিস সভা-সমাবেশ প্রভৃতি স্হানে জঙ্গিদের বোমা হামলা করে চিরদিনের জন্য পঙ্গুত্ববরণ করে হাজার হাজার মানুষ। হাওয়া ভবনের মদদপুষ্ট অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট সৃষ্টি করে কৃত্রিম সংকট।প্রশাসন, বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, শিক্ষা প্রতিষ্টান, পুলিশ প্রশাসনসহ সর্বস্তরে নিলজ্জ দলীয়করণ করে দেশকে ধ্বংসের মুখে ফেলে দেয়। ১ কোটি ৩২ লক্ষ ভুয়া ভোটার করে ক্লান্ত হয়নি। সূক্ষ্ম কারচুপি ইলেকশন ইজ্ঞিনিয়ারিংয়ের নীল-নকশা নির্বাচন করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে।
২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামীলীগের সর্বাত্মক আন্দোলনের ফলে তাদের সাজানো নির্বাচন বাতিল করতে বাধ্য হয় তৎকালীন সরকার। জরুরী অবস্থা ঘোষিত হয়। নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন হয়। ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায়, শেখ হাসিনা “দিন বদলের সনদ” – তাঁর নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন। ২০০৮ সালের ২ নভেম্বর প্রথমবার তফসিল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনার, ১৮ ডিসেম্বের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। বিএনপি সে নির্বাচনে অংশ নিতে রাজি হয়নি, তাই দলটির অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে নির্বাচনের তফসিল পুনঃনির্ধারণ করে, নির্বাচনের তারিখ পিছিয়ে ২৪ শে ডিসেম্বের ঘোষণা করা হয়। দুঃখের বিষয় বিএনপি সে তারিখে ও নির্বাচনে যেতে রাজি না হাওয়ায়, পরবর্তীতে বিএনপির সম্মতিতে চুড়ান্তভাবে ২৯শে ডিসেম্বর নির্বাচনের তারিখ নির্ধারিত হয়। এই নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বে গঠিত চারদলীয় জোটের মহাবিপর্যয় নেমে আসে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মাহাজোটের মহাবিজয় আসে। আওয়ামীলীগ এককভাবে ২৩০টি এবং জোটবদ্ধভাবে ২৬২ টি আসন পায়।২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহন করেন। ২০০৮ সালে নির্বাচিত হয়ে, শেখ হাসিনা জাতিকে লজ্জা থেকে, ইতিহাসের কালো অধ্যায় হতে নিস্কৃতি দিয়েছেন, আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনাল গঠন করে, ছয়জন কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসীতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করে। এই বিচারে ৩০ লক্ষ শহীদ ও ২লক্ষধিক নির্যাতিত নারীর আত্মার সম্মান রক্ষা করেছেন। ১৯৭২ সালের গৃহীত সংবিধানের মূল চেতনায় ফিরে যাওয়ার লক্ষ্যে ২১জুলাই ২০১০ সালে জাতীয় সব দলের সমন্বয়ে ১৫ সদস্যের একটি সংবিধান সংশোধনী কমিটি গঠিত হয়। সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী বিল উতাপন করা হয়। দেশের প্রতিষ্টিত সকল রাজনৈতিক দল সংবিধানবিশেষজ্ঞ, বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী পেশাজীবী, সাংবাদিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ, সমাজের বিভিন্ন শেণীর মানুষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার করে দীর্ঘ ১ বছর। অবশেষে ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধনী বিলে সংশোধনীর ফলে মহান মুুক্তিযোদ্ধের চেতনা সম্বলিত ১৮৭২-এর সংবিধানের ৪ মূলনীতি সংবিধানে পুনঃ সংযোজিত হয়।

রূপকল্প-২০২১ এ সাধারণ মানুষের বিশ্বাস এবং ভরসার জন্যে সাধারন মানুষ শেখ হাসিনাকে আবার ২০১৪ তে নির্বাচিত করে। এই বার, শেখ হাসিনার সরকার, ঢাকায় মেট্রো রেল প্রকল্প, দেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুত প্রকল্প, ঘরে ঘরে বিদ্যুত নিশ্চিতকরণ জাতীয় প্রবৃদ্ধি ৭ এ উন্নীতকরণসহ আরো অনেক মেগা প্রকল্প হাতে নিয়ে দেশের উন্নয়ন দৃষমান করতে দূর্বার গতিতে কাজ করে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনার টানা দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশ এমন কিছুর সাক্ষী হয়েছে যা আমাদের কল্পনাতীত ব্যাপার ছিল। শেখ হাসিনা দেশে-বিদেশে উন্নয়নের এমন এক রেকর্ড গড়েছেন যা এক কথায় অনন্য এবং অসাধারণ। এই সাফল্যের কৃতিত্ব হলো শেখ হাসিনার অদম্য শক্তি, সৎ সাহস অসাধারণ পরিকল্পিত নেতৃত্ব। শুধু অসাধারণই না এই ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা অদ্বিতীয়, বিপুল জনপ্রিয়তা এবং জনসম্পৃক্ততা ধরে রেখে এমন রেকর্ড কেউ করতে পারেননি, কেউ পারবে বলে বর্তমানে দেশের কোন মানুষ বিশ্বাস করে না। আন্দোলনে নামে নির্বাচন বানচাল প্রতিহত করতে বিএনপি-জামায়াত আগুন সন্ত্রাস, পেট্রোল বোমাকে জয় করে তাঁর গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ খাদ্য ঘাটতি থেকে খাদ্য উদ্বৃত্বের দেশ হিসেবে পরিণত করেছেন।ব্যবসা-বাণিজ্য রপ্তানিতে গড়ে ১৮.৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে।দেশব্যাপী টিসিবি’র ডিলার এবং খোলা বাজারে বিক্রয়ের মাধ্যমে ভোক্তা পর্যায় সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য সরবরাহ নিশ্চিতকরণ, ডলারের সংখ্যা ১৪০ জন থেকে ৩ হাজার ৫৩ জনে উন্নীত। টিসিবির গুদাম ধারণ ক্ষমতা ১১ হাজার ৭০ টন থেকে ৪৩ হাজার ৬৪৫ টনে উন্নীত। রেজিস্টার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানির সকল গ্রাহক সেবা কার্যক্রম অনলাইনে সম্পাদন করা হচ্ছে।

সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ ব্যাপক বৃদ্ধি। ৮টি ইপিজেড-এ বিনিয়োগের উন্নত পরিবেশ সৃষ্টি। বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও রপ্তানি ব্যাপক বৃদ্ধি।দেশের প্রতিটি বিভাগে ন্যুনতম একটি করে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রকল্প শেষের দিকে।সিরাজগঞ্জ, মংলা, আনোয়ারা, মীরসরাই মৌলভীবাজার। শিল্প স্হাপনকে উৎসাহিত করতে একটি আধুনিক শিল্প নীতি প্রণয়ন। ৪০ হাজার ২৬৬টি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প স্হাপন। ৮হাজার ৮৭৬ কোটি বিনিয়োগ। ৩ লক্ষ ১৯ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান। ভূমি রেকর্ড ও জরিপ ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটাইজেশন করণ। পার্বত্য চট্টগ্রামে ১ লক্ষ ২০ হাজার ভূমিহীন পরিবারের মধ্যে ৫৫ হাজার একর কৃষি খাস জমি প্রদান। বৈদেশিক কুটনীতিতে তাঁর দূরদর্শী বিদেশ নীতির মাধ্যমে বাংলাদেশের সাথে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ও বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোর সাথে সর্বকালের সবেচেয়ে নৈকট্যপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনে সমর্থ হলে ও দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে কথিত দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিশ্বব্যাংক যখন বাংলাদেশর স্বপ্নের পদ্মাসেতু প্রকল্প থেকে অর্থায়ন প্রত্যাহার করে তখন শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্ব বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দিয়েছে – বাংলাদেশ পারে সম্পূর্ণ দেশের টাকায় বাংলাদেশর ইতিহাসে সবচে বড় মেগা প্রজেক্ট এই পদ্মাসেতুর কাজ করতে। শেখ হাসিনার নির্দশে এরই মধ্যে অর্ধেকের বেশি কাজ শেষ হয়েছেন।পদ্নাসেতু এখন মানুষের কারে দৃশ্যমান। শেখ হাসিনা গ্রামের অসহায় নারীদের কথা চিন্তা করে স্বাস্থ্য উন্নয়নে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহন করেন। বর্তমানে প্রায় ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক সারাদেশে মা ও শিশুদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছে। এসব কেন্দ্র থেকে ৩০টি রোগের ওষুধও দেয়া হচ্ছে বিনামূল্যে। সরকারের এই জনস্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম জাতিসংঘ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, বিশ্বব্যাংকসহ বহির্বিশ্বে বিপুল প্রশংসা কুড়িয়েছে। ২৪ টি নতুন হাসপাতাল চালু হয়েছে। ১০০ শয্যার জেলা হাসপাতাল, ২৫০ শয্যার ৫০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সর শয্যা সংখ্যা ৩০ থেকে ৫০-এ উন্নীত করা হয়েছে। মানুষের গড় আয়ুস্কাল বেড়ে ৬৭.৭ বছরে উন্নীত হয়েছে।

১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার, বঙ্গবন্ধু আদর্শে অতন্দ্র প্রহরী বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকার যারা বিরোধীতা করেছিলো, বিএনপি, জামায়াত তাদের হাতে বাংলাদেশের পতাকা সুরক্ষিত নয় তারা ক্ষমতায় এসে এই পতাকা পরিবর্তন করতে চেয়েছিলো, যুদ্ধাপরাধীদের এমপি বানিয়েছিলো, মন্ত্রী বানিয়ে তাদের গাড়িতে সে পতাকা বহনের সুযোগ করে দিয়েছিলো। তারা ক্ষমতায় বসে শহীদদের আত্মার সাথে মা- বোনের ইজ্জতের সাথে বেঈমানি করেছে।

২০১৭ সালে অর্থনৈতিক সাফল্যে সারা বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশকে কান্ট্রি অব দ্যা ইয়ার ঘোষণা করেছে বিশ্ববিখ্যাত পত্রিকা দ্যা ইকোনোমিস্ট। অর্থনৈতিক অগ্রতিতে বাংলাদেশ প্রত্যাশার চেয়েও বেশি সাফল্য দেখিয়ে যাচ্ছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। ২০১৮ সালেও টানা তৃতীয়বারের মতো জাতীয় নির্বাচনে বিশাল জয়লাভ করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সরকার। শেখ হাসিনার দূরদর্শী বৈদেশিক নীতির সুফল হিসেবে, ভারতীয় লোকসভায় ঐতিহাসিক স্থল সীমান্ত চুক্তি পাশ হয়েছে। এর দলে ছিটমহলবাসীর চার শতকের দুঃখ দুর্দশার অবসান হয়েছে। শেখ হাসিনার চৌকস নেতৃত্বে ২০০৯-২০১৪ শাসনামলে, বাংলাদেশ দুইটি ঐতিহাসিক সমুদ্র সীমান্ত মামলায় জয়লাভ করে ভারত ও মিয়ানমারের সাথে। বাংলাদেশ ভারতের সাথে বঙ্গোপসাগরের বিরোধপূর্ণ ২৫,৬০২ বর্গ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে ১৯,৪৬৭ বর্গ কিলোমিটার জায়গা পায়।

জঙ্গী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থানের কারণে বার বার তিনি পরিণত হয়েছেন জঙ্গিগোষ্ঠীর একমাত্র লক্ষ্যবস্তুতে। এ পর্যন্ত তিনি ১৯ বার মৃত্যুর কাছাকাছি থেকে ফিরে এসেছেন। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দারিদ্র্য বিমোচনে তাঁর প্রণীত ৬ দফা গৃহীত হয়েছে। সারাবিশ্বে বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সংস্থা শেখ হাসিনা প্রণীত দারিদ্র্য বিমোচন নীতি অনুসরণ করে যাচ্ছেন, পিতার অসমাপ্ত কাজ যে সমাপ্ত করতে হবে। নির্মাণ করতে হবে একটি অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক আর ভবিষ্যতের আধুনিক সন্ত্রাসমুক্ত, জঙ্গিমুক্ত, ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ, এটি শেখ হাসিনার কাছে বর্তমান প্রজন্মেরও প্রত্যাশা। শেখ হাসিনাই এ দেশের ধ্বংসস্তুুপ থেকে ওঠে আসা এক ভার্চুয়াল রাজকন্যা।নেতৃত্বের নৈপুণ্যে জননন্দিত শেখ হাসিনা১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর বাংলার দুঃখি-মেহনতি শ্রমজীবী মানুষের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে জাতির মননে, স্বাধীনতার স্বনির্ভরতার চেতনার যে স্বপ্নের বীজ বুনে দিয়েছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ইতিহাসের এক জঘন্য নারকীয় হত্যাকাণ্ডের মাধমে সেই স্বপ্নের অবসান হয়। তারপর থেকে অন্ধকার পথে স্বৈরাচার-এ পথে হেঁটেছে বার- বার বাংলাদেশ।তাই মানুষের আশার, মানুষের মুক্তির প্রতিফলন ঘটেনি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শচ্যুত সেই বাংলাদেশের যাত্রাকাল ২১ বছর পর অনেক প্রতিকুলতা ঘাত-প্রতিঘাতের পর প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর পদ অলঙ্কৃত করেন শেখ হাসিনা। তাঁর নেতৃত্বে শুরু হয় অন্ধকারমুক্ত করা, পথ হারানো বাংলাদেশের সঠিক পথে ফেরার পালা। দীর্ঘ একুশ বছরের কণ্টকাকীর্ণ রাজনীতির ধূম্রজাল থেকে দেশকে আবার নতুন উদিত সকালের আলোয় আলোকিত পথের দিশা দেখানোর পালা। কন্টকাকীর্ণ কাজগুলো সহজ নয় অনেক সুকঠিন ছিল। তবু অনড় ছিলেন অদম্য সাহসী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। তাই বলা যায় The strong leadership of Sheikh Hasina has set Bangladesh on the road of progress and prosperity.

উল্লেখ্য, ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা স্বজন হারানোর বেদনা নিয়ে প্রিয় মাতৃভূমিতে প্রত্যাবর্তন করেই পিতা বঙ্গবন্ধুর গড়ে তোলা দলটির হাল ধরেন। দলের ভাঙ্গন, স্বৈরাচার শাসকের মৃত্যু হুমকি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, অস্থিরতা আর জীবনের ঝুঁকি নিয়েই তিনি ঘুরে বেড়িয়েছেন বাংলাদেশের হাট-ঘাট গ্রাম-গঞ্জে, আর মাঠ-ময়দানে। দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে তিনি ছুটে গেছেন দেশের একেবারে সাধারণ জনগণ ও হতদরিদ্রদের কাছে। দলকে ভাঙ্গনের থেকে মুক্ত করছেন তাঁর দক্ষ কৌশলে। গরীব-দুঃখী মানুষের দুঃখ-দুর্দশা, স্বপ্ন আর প্রত্যাশার কথাগুলো খুব কাছে গিয়ে শুনেছেন।উপলব্ধি করেছেন, দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর চাওয়া-পাওয়া, সুখ দুঃখগুলো। স্নেহ প্রীতি ভালোবাসায় ধন্য হয়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী জন্য তিনি রচনা করেছেন উন্নত এক আলোকিত বাংলাদেশের রূপকল্প।বাংলার ভাগ্যাকাশে উদিত হলো রক্তিম সূর্য্য। সে উদিত সুর্য্যের আশার আলো নিয়ে আসে বাংলার দুঃখি মানুষের ঘরে-ঘরে। প্রজ্ঞাবান, দূরদর্শী, শেখ হাসিনা পিতার মতো ঠিক ধরতে পেরেছেন বাঙালি জাতির মনের সাঁইকি। তাই তিনি মানুষের মনে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নের বীজ বুনে দিতে সক্ষম হন আবাল-বৃদ্ধ-বণিতার জনগণের মানসপটে। ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং যুদ্ধাপরাধের বিচার, বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচার কার্যকরের সাহসী উদ্যোগ তরুণ প্রজম্ন সমাজের চেতনার স্ফুরণ ঘটায়। কেননা বাংলাদেশের মাটিতে যুদ্ধাপরাধের বিচার ও বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার কার্যকর হবে- এটা একটা দুঃস্বপ্ন ছিলো।বাংলাদেশের ইতিহাসের খুব আলোড়ন সৃষ্টিকারী পদক্ষেপ হলো ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম গ্রহণ করা। বিচারের কার্যক্রম শুরু করার প্রথম দিন থেকেই দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করে, বিচারের কাজকে বাধাগ্রস্থ করার প্রচেষ্টা চালানো হয়। ফাঁসির কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করার বিভিন্ন কলা-কৌশল গ্রহণ করেন।

যুদ্ধাপরাধীদের দলের পক্ষ থেকে বিদেশে আইনজীবী নিয়োগ দেওয়ার মাধ্যমে বিচারকে বাধাগ্রস্থ করার হীন উদ্দেশ্যে গর্হিত কাজ করতে দ্বিধা করেনি স্বাধীনতার বিরোধী প্রতারকচক্র। দেশের অভ্যন্তরে জ্বালাও পোড়া পেট্রোল বোমাসহ নানাবিধ বিশৃঙ্খলা তৈরির প্রক্রিয়ায় অস্থিতিশীল করার মাধ্যমে সরকারকে বার-বার পক্ষাখাতগ্রস্থ করার হীন চেষ্টা করেছিলো একটি বিশেষ দলের জোট। তাদের মিত্র দেশ থেকে ও ফোন করে হুমকি দিয়েছিলো। কিন্তু শেখ হাসিনা ছিলেন অটল, অবিচল ইস্পাত কঠিন। এদেশের মানুষ কখনো ভাবতে পারেননি এই স্বৈরাচারী শাসকদের পতন হবে, শেখ হাসিনা নেতৃত্বে কৌশলে স্বৈরাশাসকের পতন হয়েছে। শেখ হাসিনা তাঁর চিন্তা-চেতনায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সব ষড়যন্ত্র, সকল বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে বিচার কার্যকর শেষ করে বিশ্বে অনন্য উদাহরণ স্থাপন করেন। জঙ্গিবাদ নির্মূলে শেখ হাসিনার গৃহীত পদক্ষেপ জিরো টলারেন্স এবং সুদৃঢ় অবস্থান বিশ্ব নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের অন্যতম একটি কারণ। তিনি জীবন বাজি রেখে কাজ করে যাচ্ছেন, নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছেন দেশ ও দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করার জন্য। দেশীয় এবং বিশ্ব ষড়যন্ত্রকে তিনি দূরদর্শিতা ও সাহসিকতার সঙ্গে মোকাবিলা করে নেতৃত্বের অনুপম আদর্শিক স্থান দখল করে নিয়েছেন বাংলাদেশসহ বহিঃবিশ্ববাসীর কাছে। তাঁর বুদ্ধিমর্তায় ১০০টি স্থানে ইকোনমিক জোন, সমুদ্র বিজয় ও সমুদ্র অর্থনীতির সম্ভাবনা কাজে লাগানো, রেলের উন্নয়ন ও রাস্তাঘাটসহ অবকাঠামো নির্মাণ, ফরেন রিজার্ভ বৃদ্ধি, রপ্তানি খাত ও আয় বৃদ্ধি, তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে ডিজিটাল বিপ্লব প্রভৃতি কর্মযজ্ঞের মাধ্যমে দেশকে তিনি স্বল্প সময়ে মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছেন।রোহিঙ্গা ইস্যুতে অসীম সাহসিকতা বিশাল উদারতা এবং মানবিকতার অনুপম দৃষ্টান্ত স্থাপন করে বিশ্ব নেতৃত্বের সমীহ অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন মাদার অব হিউমিনিটি শেখ হাসিনা। উল্লেখ্য, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেয়ায় এরই মধ্যে বিশ্বের কাছে প্রশংসা পেয়েছে বাংলাদেশ। ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ (মানবতার জননী) বলে অখ্যায়িত করেছে। কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে ব্রিটেন ভিত্তিক গণমাধ্যম চ্যানেল ফোর। চ্যানেলটির এশিয়া প্রতিনিধি জনাথান মিলার তার প্রতিবেদনে তুলে ধরেন ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গাদের মানবেতর জীবনের কিছু অংশ। ওই প্রতিবেদনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ বলে ভূষিত করা হয়। শেখ হাসিনা তাঁর বক্তব্যে বলেন, “আমরা এই মুহূর্তে নিজ ভূখন্ড হতে জোরপূর্বক বিতারিত ১০ লাখের অধিক রোহিঙ্গাদের মানবিক কারণে আশ্রয় ও সুরক্ষা দিয়ে যাচ্ছি।আপনারা সকলেই জানেন যে, মিয়ানমার রাখাইন রাজ্যে চলমান রাজ্যে নৃশংসতা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ফলে বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তে অবস্থার ভয়াবহ অবনতি ঘটেছে। এই নৃশংসতার হাত থেকে বাঁচার জন্য প্রতিদিন হাজার হাজার রোহিঙ্গা সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে।

রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার ফেরত যাওয়া ঠেকানোর জন্য মিয়ানমার বরাবর স্থলমাইন পুঁতে রাখছে। এতে আমরা ভীষণভাবে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। এসব মানুষ যাতে নিরাপদে এবং মর্যাদার সঙ্গে নিজ দেশে ফিরে যেতে পারেন তার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে৷ মিয়ানমার সরকারকে অবশ্যই তাদের ফেরত নিতে হবে৷ আশ্রয়ের এই সাময়িক সময়ে বাংলাদেশ সরকার সাধ্যমতো শরণার্থীদের সহায়তা করবে৷ তিনি মিয়ানমার সরকারকে রোহিঙ্গাদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন বন্ধেরও আহ্বান জানান৷ আমাদের জাতীয় ইতিহাসে শেখ হাসিনার উন্নয়ন অবদান অপরিসীম। তাঁরই নেতৃত্বে বাঙালি জাতি অর্জন করে বহুমূখী উন্নয়নের, নারীর ক্ষমতায়নের বাংলাদেশ। তাঁর এই উন্নয়নের অগ্রযাত্রা জাতীয় ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

বাংলাদেশ এখন মোবাইল, ইন্টারনেট, অনলাইন, ইউটিউব, ফেসবুক, লিঙ্কড ইন, টুইটারসহ সব প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিশ্বের সঙ্গে তালমিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এখন ধনী-গরীব সবার হাতে হাতে মোবাইল, কৃষক, শ্রমিক, দিনমুজুর কেউ বাদ যায়নি। এসবের মাধ্যমে বেড়েছে কর্মক্ষেত্র, বেড়েছে আর্থিক তৎপরতা। উন্নত, সবৃদ্ধির দেশ গড়ার স্বপ্নে বাংলাদেশের অগ্রগতি ধারাবাহিকতায় সততা ও নিষ্ঠার সাথে দেশ ও দেশের মানুষের উন্নয়নের কাজে নিজেকে সমর্পণ করেছেন শেখ হাসিনা। তার সফল নেতৃত্বের পাল্লাটি কেবলই অনেক ভারী হচ্ছে। দেশে এবং আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে মহামানবী হিসেবে তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ বিশ্বের বড় বড় নেতা-নেত্রীরা।

বাংলাদেশে প্রগতিশীল, বুদ্ধিজীবী শিক্ষকরা বলেন অনেক নারীদের বীরত্বের কথা শোনা গেলেও শেখ হাসিনা হচ্ছেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম বীর। তাঁর মতো সৎ, সাহসী নারী পৃথিবীতে আর দেখিনি। দলীয় সরকারের সাফল্যের ধারাবাহিকতার জন্য শেখ হাসিনার মতোই নারীর বারবার দরকার। তার নেতৃত্বে দূরদর্শিতার স্বীকৃতি ও প্রশংসায় অভিষিক্ত হচ্ছে আমাদের বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশ এখন আর সেই বাংলাদেশটি নেই। এখন রূপকল্প ২০৪১-এ উন্নত বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা, রাজনৈতিক নেতারা ও গণমাধ্যম বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নানা উপাধিতে ভূষিত করেছেন। সাবেক মার্কিন প্রেসিন্ডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, “শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ একটি আদর্শ, শান্তি ও সম্প্রীতির মুসলিম রাষ্ট্রের মডেল হিসাবে প্রতিষ্টিত হয়েছে” শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে রোল মডেল হিসেবে অনুসরণের আন্তর্জাতিক বিশ্বময় ব্যাপক আলোচিত।

আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ও সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের চলমান অগ্রযাত্রার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ দ্রুত সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ১৯৯৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা বলেন” শেখ হাসিনার নেতৃত্বের অসাধারণ গুণ হলো নির্যাতন-নিষ্পেষণ বঞ্চিত, দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানো। শেখ হাসিনার মানুষের প্রতি ভালোবাসা আমাকে মুগ্ধ করেছেন”।

আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, শেখ হাসিনা নিজের বিচক্ষণতা আর দূরদর্শিতা প্রমাণে শুধু দক্ষিণ এশিয়ারই নন, বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর ও জনপ্রিয় নেত্রী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন। বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ এখন উন্নয়ন আর অগ্রগতির রোল মডেল। ২০১০ সালে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী “টনি ব্লেয়ার” বলেন গনতন্ত্রের প্রতি শেখ হাসিনার আস্থা অপরিসীম। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তাঁর সাহস অনন্য। তাঁর দুরদৃষ্টি অসাধারণ। বাংলাদেশের সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাফল্যের তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। বিশ্বের সৎ পাঁচজন সরকার প্রধানের তালিকায় রয়েছেন তিনি। বিশ্বের ১০০ ক্ষমতাধর নারীর তালিকায় আছে তার নাম। বিশ্বে ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় শেখ হাসিনার নাম রয়েছে। একজন নারী হয়েও দক্ষিণ এশিয়ায় তাঁর নেতৃত্ব ও রাজনৈতিক সাফল্য এখন বহুল আলোচিত ও প্রশংসনীয় । তিনি কেবল বাংলাদেশের গৌরব নয়, তিনি বিশ্বের গৌরব। তিনি উদার অগ্রসরমান বিশ্বের প্রতীক। শুধু বাংলাদেশ বা উপমহাদেশে নয়, রাজনৈতিক নেতৃত্বগুণে সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে উঠে এসেছেন তিনি। তাই দৃঢ়তার সাথে বলতে পারি Sheikh Hasina is a pillar for women’s rights in South Asia. এই অবস্থানে যেতে তাকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে শক্তিশালী নেতিবাচক চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর থেকে কঠোরতা সংগ্রাম লড়াই করতে হয়েছে। সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সাহসী ভূমিকা নিতে হয়েছে দৃঢ়চিত্রে জীবন বাজি রেখে। তাঁর নেতৃত্বে দেখা গেছে শুধু দেশে নয়, উন্নয়নশীল দেশগুলোর স্বার্থ রক্ষা করার জন্য শেখ হাসিনার অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ও নেতৃত্ব এখন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পাচ্ছে। তাঁর গতিশীল নেতৃত্ব বাংলাদেশের এমডিজি এর লক্ষ্য অর্জন এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। এমডিজি এর লক্ষ্য অর্জনে দৃঢ় পদক্ষেপ রেখেছেন তিনি তা আন্তর্জাতিক বিশ্বের দরবারে অনুসরণীয়-অনুকরণীয় আদর্শ। এ সাফল্যের কৃতিত্ব কেবলমাত্র তাঁরই।তার সাহসীকতায় বঙ্গবন্ধুর শতভাগ স্বপ্ন পূরণের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ।
শেখ হাসিনা একটি নাম- একটি সাহসী ঠিকানা, বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর, উন্নয়নের রূপকার, নেতৃত্বের অনন্য উদাহরণ, সর্বপরি একটি ইতিহাস। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ায় অন্য নারী নেত্রীরা যা পারেননি, বাংলাদেশে শেখ হাসিনা তা পেরেছেন।

শেখ হাসিনা একজন প্রাকটিসিং মুসলিম। তাঁর র্ধমীয় মানস, জ্ঞান-প্রজ্ঞ অসাধারণ। ইবাদত বন্দেগী থেকে শুরু করে ধর্মীয় অনুশাসন প্রতিপালনে অভ্যস্ত।ইসলাম সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ সমর্থন করে না- এ মর্মে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে এক অসাধারণ ভাষণ দিয়েছেন। তাঁর মতে “ধর্মের শাশ্বত শিক্ষা, নৈতিকতা ও মূল্যবোধ মানুষকে মানুষ বানায়। নৈতিক মানসম্পন্ন মানব সম্পদ তৈরিতে ধর্মীয় শিক্ষা, নৈতিকতা ও মূ্ল্যবোধের বিকল্প নাই। বিশ্ব-ভ্রাতৃত্ব, পরমতসহিষ্ণুতা ও ন্যায়বিচার ধর্মীয় শিক্ষা অনেক গুরুত্ব বহন করে”। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে তিনি আরো বলেন, “ধর্মের নামে যে কোন সহিংস জঙ্গীবাদ বিস্তাররোধ তৃণমূল পর্যায়ে আমরা পরিবার, নারী, যুব সমাজ গণমাধ্যম এবং ধর্মীয় নেতাদের সম্পৃক্ত করেছি। বৈশ্বিক এ সমস্য মোকাবেলায় আমার প্রস্তাব হচ্ছে “সন্ত্রাসীদের অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করতে হবে। সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন বন্ধ করতে হবে, শান্তিপূর্ণ উপায়ে আন্তর্জাতিক বিবাদ মীমাংসা করতে হবে। অর্থ পাচার, সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন এবং অন্যান্য আন্তঃরাষ্ট্রীয় সংঘবদ্ধ অপরাধের ক্ষেত্রে সাইবার জগৎ থেকে উদ্ধৃত হুমকি মোকাবিলা এখন জরুরী হয়ে পড়েছে। এক্ষেত্রে সমন্বিত উদ্যােগ নিতে আমি জাতিসংঘের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।” তাঁর এই বক্তৃতা সারা পৃথিবীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে। নানা প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে শেখ হাসিনা এদেশের মেহনতি মানুষের ভাত-ভোট এবং সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার আদায়ের জন্য অবিচল থেকে সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। দীর্ঘদিন তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রমে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে।স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য শেখ হাসিনাকে বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা সম্মানিত করেছে। সংখ্যালঘু, বৌদ্ধদের বিহার পুড়িয়ে, পেট্রোল বোমা মেরে সাধারণ মানুষ হত্যা করে, ব্লগার হত্যা থেকে শুরু করে রেস্টুরেন্টে জঙ্গী হামলা, ঈদের দিন ঈদগাহে হামলা, পশু হত্যা, গাছপালা কেটে, ইত্যাদি দ্বারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ধ্বংস করার ভয়াবহ চেষ্টা হয়েছিলো। হাসিনা সরকার তা দমন করেছেন সাহস নিয়ে শক্ত হাতে। তাঁর দূরদৃষ্টি, সততা, মেধা ও সাহসী নেতৃত্বের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘নারীর অধিকার ও ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার স্তম্ভ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন কানাডার আন্তর্জাতিক উন্নয়নমন্ত্রী মেরি ক্লড বিবেউ। দক্ষিণ এশিয়াভিত্তিক বিখ্যাত সংবাদপত্র ‘Dissdash’ তাদের সমীক্ষায় শেখ হাসিনাকে ‘দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় চমৎকার ব্যক্তিত্ব’ হিসেবে অভিহিত করেছে। বর্তমান বিশ্বে এশিয়ার সবচেয়ে ক্ষমতাধর, সাহসী, সততাবান রাজনৈতিক নেত্রী হচ্ছেন বঙ্গবন্ধু শেখ হাসিনা। ‘এশিয়ান ফাইভ মোস্ট পাওয়ারফুল উইমেন ইন পলিটিকস’ শীর্ষক সচিত্র প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করেছে- এশিয়ার নারী নেত্রীদের মধ্যে শেখ হাসিনাকে তালিকার প্রথমেই স্থান দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন ‘সমস্যার সমাধানদাতা’ বা ‘প্রবলেম সলভার’ হিসেবে প্রশংসিত হয়েছেন বহুবার।

বিশ্বের বিভিন্ন জরিপে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির তথ্য উঠে আসছে বার বার; বিশেষ করে ২০১৩-১৪ সালে বিএনপি জামায়াতের আগুন সন্ত্রাস, পেট্রোল বোমা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি দক্ষতার সাথে কঠোরভাবে দমন করে দেশকে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাওয়ায় বেড়েছে তার বিপুল জনপ্রিয়তা।জাপানভিত্তিক সংবাদপত্র নিক্কেই এশিয়ান রিভিউ এক প্রতিবেদনে বলেছে, “শেখ হাসিনা অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কঠোর কর্তৃত্ব দিয়ে নিজের দেশের বিরোধী পক্ষকে যেমন উড়িয়ে দিয়েছেন, তেমনি পূর্ব ও পশ্চিম উভয় বিশ্বে নিজের অবস্থানকে আরো দৃঢ় করে নিয়েছেন তিনি।তাঁর সততা, বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশকে এখন আর কেউ অবহেলা অবজ্ঞা করতে পারে না। বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ এখন উন্নয়ন আর অগ্রগতির সফলতার, রোল মডেল। বাংলাদেশে জাতির মননে, স্বপ্নে এখন উন্নত বাংলাদেশের বাসিন্দা হওয়া স্বপ্ন। আর এই স্বপ্নের রচয়িতা, স্বপ্ন বাস্তবায়নে রচয়িতা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। দেশবাসীর প্রত্যাশা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে উন্নয়নে এগিয়ে যাচ্ছে তারই সুযোগ্য কন্যার হাত ধরে। উন্নত সমৃদ্ধির বাংলাদেশের রূপকার বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য উত্তরসুরি শেখ হাসিনা। এজন্যই জনগণের হূদয়ের প্রত্যাশার আলো উদ্ভাসিত বাংলাদেশের স্বপ্নযাত্রায় অকুণ্ঠ সত্য, কঠোর, শক্ত উচ্চারণ- ‘যতদিন শেখ হাসিনার হাতে রবে দেশ, আর পথ হারাবে না বাংলাদেশ’।

শেখ হাসিনার ১১ বছরের অধিক সময় ধরে নিরবচ্ছিন্ন আর ক্লান্তিহীন প্রচেষ্টার ফলে বাংলাদেশ বর্তমানে যে উন্নয়নের জায়গায় অবস্থান করছে, তাতে একজন শেখ হাসিনা হয়ে গেছেন বাংলাদেশের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর। তিনি পুরো বিশ্বের গর্ব। তবে অবস্থাদৃষ্টে বা বতমান প্রেক্ষাপটে মনে হচ্ছে, শেখ হাসিনার সৎ, সাহসি নেতৃত্বে যতই বাংলাদেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি নতুন নতুন বন্দরে নোঙর ফেলছে, ততই দেশে-বিদেশে তাঁর শত্রুর সংখ্যাও ক্রমাগত ভাবে বেড়ে যাচ্ছে। তাঁকে শেষ করে দেওয়ার জন্য এখন ও দেশে দেশের বাইরে দুষ্টচক্র দিনরাত অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে। দলের ভিতর ঘাপটি মেরে বসে আছে বিএনপি জামাতে শিবিরের সুবিধাবাদীরা। তারা সব সময় দলের হয়ে সুযোগ- সুবিধা নিয়ে সুযোগের সন্ধানে বসে আছে ছোবল মারার জন্য। শেখ হাসিনার একমাত্র আশা-ভরসাস্থল দলের নিবেদিত প্রাণপ্রিয় তৃণমুলের নেতাকর্মীরা, যারা কোনো কিছু পাওয়ার জন্য রাজনীতি করে না। যারা দীর্ঘ সময় ক্ষমতা থাকাকালীন কোন অন্যায় দুঃনীতির করেনি। বড় কোন পদ-পদবীর আশা না করে বঙ্গবন্ধু আদর্শকে ভালোবাসেন। এই তৃণমুলেরর কর্মীরা বঙ্গবন্ধু মতো বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে ভালোবাসেন মন থেকে বিশ্বাস করেন। সেটা প্রতিফলিত হয়েছে এক ১১/সময়। দলের বড় রড় নেতারা যখন দ্বিধা-দ্বন্ধে ছিলেন, তখন তৃণমুলের সকল কর্মীরা একযোগে জীবনবাজি রেখে আন্দোলন সংগ্রামে করে, গগণবিদারী স্লোগান তুললের “শেখ হাসিনা ছাড়া কোন ইলেকশান হবে না”।

বঙ্গবন্ধুর মতো তৃণমুলের কর্মীরা তাঁকেও মন-প্রাণ দিয়ে ভালোবাসেন, দোয়া করেন। তিনি তাঁর জীবনকে বার-বার বিপন্ন করে জনগণের ভালোবাসার প্রতিদান প্রতিনিয়ত দিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর হাত ধরেই অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে এক বিস্ময় বিশ্ববাসী উপলব্ধি করে যাচ্ছেন। বর্তমানে বিদেশীরাও বাংলাদেশের সাফল্যের উচ্ছ্বসিত ভূয়সী প্রশংসা করে থাকেন। দেশে ও দেশের বাইরে ভিশনারী লিডার হিসেবে শেখ হাসিনার যে ঈর্ষণীয় সাফল্য তা এক কথায় অনন্য অসাধারণ, অতুলনীয়। জাতির মননে যে উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্নের বীজ বপন করে দিয়েছেন। সেই স্বপ্নের বিভোর হয়ে বাংলাদেশ আজ উন্নত বাংলাদেশের সোপানের পথ এগিয়ে চলছে।

তাই আমরা সহজভাবে সত্য কথাটা বলতে পারি, বাংলাদেশের স্বাধীনতার রূপকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং উন্নত বাংলাদেশের রূপকার জননেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি প্রথমে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নে উজ্জীবিত করেছেন জাতিকে, ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন। রাজনীতির, অর্থনৈতিক ভিশনমিশন ‘ঐতিহাসিকতা’, বহুমুখী উন্নয়নে ‘বাংলাদেশকে নিয়ে সুদূরপ্রসারী চিন্তা-চেতনা পূর্ব কর্মপরিকল্পনা করে সফলতার শীর্ষ স্হানে পৌঁছে যাচ্ছেন। বিএনপি জামায়াত, স্বাধীনতাবিরোধী গোষ্ঠী, প্রতিক্রিয়াশীল ধর্মান্ধ জঙ্গী গোষ্ঠী, অপশক্তি-সাম্প্রদায়িক গণতন্ত্রের পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে তাঁর নিরলস পরিশ্রম, অসমসাহসী, ইস্পাতদৃঢ় লড়াই বঙ্গবন্ধু কন্যাকে যুগসন্ধিক্ষণের, আত্ম-প্রত্যয়দীপ্ত একক কাণ্ডারীতে রূপায়িত করেছে। তিনি দিনমুজুর, দরিদ্র, হতদরিদ্র শ্রমিক খেটে খাওয়া, সহায়সম্বলহীন মানুষের কাছে তাদেরই একজন পরম সহায় আপনজন। পিতার অসম্প্রাদায়িক বাংলাদেশ! সে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যপরিবর্তনের জন্য অন্তহীন হেঁটে চলা ‘শেখের বেটি’। রাজনীতি কর্মীদের কাছে প্রিয় “আপা” তাঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা, দূরদর্শিতা, সততা, সাহসিকতা এবং প্রায়োগিক সিদ্ধান্তের সঠিকতা বিশ্বের নেতাদের কাছে বিশেষ বার্তা দিয়ে থাকে এবং সকলেই শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করে যাচ্ছেন। অনেক বিষয়েই শেখ হাসিনা তাঁর ব্যক্তিত্বের পরিচ্ছন্নতায় ও সাহসিকতায় একাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সত্য, ন্যায় বিচারের ক্ষেত্রে তিনি সব সময় আপোষহীন। আজ ন্যায় বিচারের ক্ষেত্রে তিনি নিজের দলের লোককে একচুল পরিমান ছাড় দেয়নাই।রাষ্ট্রিয় সর্বোচ্চ পদে নারীর অবস্থান দিক থেকে বিশ্বের শীর্ষে পর্যায়ে রয়েছে বাংলাদেশ। পিতার স্বপ্ন পূরণে বাঙালি জাতির আত্মপরিচয়, ভাষা স্বাধীনতা, গণতন্ত্র উন্নয়ন উন্নত- সমৃদ্ধ সোনার বাংলা নির্মাণের মহৎ কর্মযজ্ঞ, ধ্বংসজ্ঞ থেকে উঠে দাড়িয়েছে বাংলাদেশ।

———————————-
শাহিদা আকতার জাহান
সদস্য, জেলা পরিষদ, চট্টগ্রাম
নির্বাহী সদস্য, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগ
সিনিয়র সহ-সভাপতি, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামীলীগ।
সভাপতি, চট্টগ্রাম দুঃস্থ কল্যাণ সংস্থা

 

 

লেখাটি লিখেছেন