স্পোরেডিক থিংকিং

Nov 5, 2020 | ধর্ম, জীবন এবং জীবনভাবনা | 0 comments

স্পোরেডিক থিংকিং

বেশিরভাগ মানুষের চাহিদাগুলো অদ্ভুদ!

১) মানুষের এক অদ্ভুদ স্বভাব। সে তার ছোট্টবেলায় চায় বড় হতে, বড়দের মতো স্বাধীনতা উপভোগ করতে চায়। সে চায় দ্রুত বড় হতে। তার ভাবনার খুঁটি যেমন এমন ছিলো বড় হওয়ার, হোম ওয়ার্ক বিহীন দিনটা কাটানোর, সে স্বপ্নের সংখ্যা
বাড়তে থাকে প্রতিনিয়ত। যেন সে শুধু বড়ো হতে চায়!

আর বড় হলে সেই বাল্যবেলার স্বাধীনতাকেই ফিরে পেতে চায়, নষ্টালজিক হয়ে ফিরে পেতে চায় সে দুরন্ত শৈশবকে, কৈশোরকে।
‘Ah love! Let’s be true to one another’.

পুরানো দিনের রঙিন স্বপ্নকে স্মৃতির
মন্দিরে রাখার চেষ্টা যেন নিয়ত বিদ্যমান থাকে তার মাঝে। রোমান্থন
করে তার অতীত স্মৃতিকে, সময়কে, দুরন্তপনাকে।
‘পুরানো সেই দিনের কথা বলবো কি রে আর?’
কিংবা ‘হে অতীত তুমি ভুবনে ভুবনে, কাজ করে যাও গোপনে গোপনে.!

২) মানুষ গাঁয়ের ভঙ্গুর সড়ক ব্যবস্থা, অনুন্নত অর্থনৈতিক অবস্থা, নিজের অবস্থান পরিবর্তনের প্রচন্ড তাগাদা অনুভব করে ছুটে চলে নগর জীবনের ব্যস্ততর স্তরে; স্থিতি থেকে গতির দিকে তার ক্ষিপ্রতা যেন চোখে পড়ার মতো থাকে! এ যেন গ্রাম ছেড়ে শহরে যাওয়ার নির্ঘুম প্রচেষ্টা!

আর বয়োঃপ্রাপ্ত হলে, শহর বা নগর জীবনে মোটামুটি স্থায়ী হলে সে ইট পাথুরের পারিপার্শ্বকে সে ভুলে থাকতে চায়। যে লোক বিলাসী বা আয়েশী জীবন ফেলে একটা মুহুর্তও কল্পনা করতে পারতো না, ক’দিন আগেও লাক্সারী তার সঙ্গী ছিলো, সে লোকই যেন শ্বেত পাথরের অট্টালিকা ছেড়ে গাঁয়ের বাদাম গাছের নিচে শীতল পাটিতে বিছানা করে দখিনা হাওয়ার শুদ্ধ অক্সিজেনে বিশুদ্ধ হতে চায়। অনেক সময় শহুরে স্বজনকে নিজের নাড়ির বাড়ির পানে নিয়ে যেতে উন্মুখ হয়ে থাকে- যেন জসিম উদ্দিনের ‘নিমন্ত্রণ’ কবিতার আহবানের মতোই-
তুমি যাবে ভাই, যাবে মোর সাথে আমাদের ছোট গাঁয়?’

৩) নতুনের প্রতি মানুষের আকর্ষণ বা মোহ যেন নিরন্তর; নতুনত্ব, উদ্ভাবন বা আবিষ্কারে যেন তার উদ্যম ছুটে চলা। নতুন সুর, নতুন গান, নতুনের গানে, নতুনের পানে মানুষের মানুষের এ ছুটে চলা দেখে মনে হয়, পুরানো কিছুর গুরুত্ব যেন নেই বললেই চলে।
আবার নতুন একদিন পুরানো হলে সে পুরানো রূপকে ফিরে পেতে ছড়িয়ে দেয় মায়াজাল: যেন John Keats এর ‘Heard melodies are sweet, those unheard, sweeter’.

৪) অনেক সংযোগ, যোগাযোগ ইত্যাদির প্রতি মানুষের সাগ্রহ আকর্ষণ যে নিয়ত বিদ্যমান। একেকটি ফোন নম্বর যেন তার কাছে একেকটি সম্পদ। ফেসবুকের একেকটি বন্ধুও যেন কাঙ্খিত, কাম্য!

আর যখন সেসব নম্বর বা যোগাযোগের আধিক্য দেখা যায়, তখন তাদের প্রতি কমে যায় আগ্রহ, ব্যস্ততার প্রসঙ্গ চলে আসে বারংবার। যেমনটি অতিরিক্ত ফেসবুক ফ্রেন্ডের ফলে অনেককে বন্ধু তালিকায়ও রাখা যায় না।

এ এক বিচিত্র সমীকরণ!

—–
মোঃ নাজিম উদ্দিন
৬ নভেম্বর ২০২০

লেখাটি লিখেছেন