বাচাল বোকা কাকের গল্পঃ প্রসঙ্গ কথা
এক কাক এক টুকরো মাংস চুরি করে উঁচু গাছের ডালে গিয়ে বসল। মাংসের টুকরোটা তার দুই ঠোঁটের মাঝখানে ধরা। এই সময় এক শিয়াল তাকে দেখতে পেয়ে এক ফন্দি আঁটল। তার লক্ষ্য শুধু ওই মাংসের টুকরোটা হাতিয়ে নেওয়া। যেই কথা সেই কাজ। বলতে থাকল ‘কাকের চেহারাটা কী সুন্দর!’ এবার কাকের আরও মনোযোগ কাড়তে গাছতলায় এসে কাককে শুনিয়ে শুনিয়ে খুব অবাক হওয়ার ভান করে বলল, ‘যেমন দেখার মতো তার শরীরের গঠন, তেমন চমৎকার তার গায়ের রঙ। শুধু গলার স্বরটা যদি চেহারার মতো একই রকম চিকন হতো, অনায়াসে তাকে পাখিদের রানী বলা যেত।’ মুখে যখন সে এসব ছলচাতুরীর কথা বলে যাচ্ছিল, তখন আসলে তার মন পড়ে ছিল ওই মাংসের টুকরোটার প্রতি। কাকের দেমাগ এই তোষামুদে প্রশংসায় খুব ফুলে উঠল। সে এখন চিন্তায় পড়ে গেল তার গলার আওয়াজের দুর্নাম নিয়ে। তার মনে হলো, সব্বাইকে জানিয়ে দেওয়া দরকার যে তার গলার স্বর কারও থেকে খারাপ নয়। সে এক বিরাট আওয়াজে কা করে ডেকে উঠল। আর টুপ করে তার ঠোঁটে রাখা মাংসের টুকরোটা মুখ থেকে খসে পড়ে গেল। শিয়াল সঙ্গে সঙ্গে মাংসের টুকরোটা তুলে নিল আর কাককে ডেকে বলল, ‘ওহে কাক সুন্দরী, তোমার গলার স্বর যথেষ্টই কর্কশ, তা তুমি ভালো করেই জানতে। তবে এবার জানতে পারলে তোমার মাথাটা কতটা মোটা।
পুনশ্চঃ অপরকে দেখাতে গিয়ে, অপরকে ক্ষমতা দেখাতে গিয়ে, জ্ঞান জাহির করতে গিয়ে অনেককে অনেক সময় এমন সব কিছু বলতে দেখা যায়, যার ফলে নিজের আম ছালা দুটোই হারাতে হয়।
তাই কম বলুন। কম জিতুন। কম ঠকুন। তা সে মন্ত্রী হোন, রাজা হোন বা প্রজা…
—
মোঃ নাজিম উদ্দিন
আগষ্ট ১৩, ২০২২