শেখ মুজিবুর রহমানঃ অরাজনৈতিক জীবন, রাজনৈতিক ইতিহাস

Mar 16, 2021 | ইতিহাস-ঐতিহ্য, সংস্কৃতি-রাজনীতি | 0 comments

শেখ মুজিবুর রহমানঃ অরাজনৈতিক জীবন, রাজনৈতিক ইতিহাস।

——

১৭ মার্চ ১৯২০। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় পিতা শেখ লুৎফর রহমান ও মা সায়েরা খাতুনের ঘরে জন্ম নেন ২ পুত্র ও ৪ কন্যার মধ্যে ১ম পুত্র- শেখ মুজিবুর রহমান (খোকা)।

গিমডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশুনার হাতে খড়ি; ১৯৪২ সালে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৩৯ সালে চাচাতো বোন বেগম ফজিলতুন্নেসার সাথে বিয়ে সম্পন্ন হয়। ১৯৪৭ সালে বি এ পরীক্ষা দেন। সে বছরই ২৮ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনার জন্ম হয়। পিতার ইচ্ছানুযায়ী ১৯৪৭ সালে মুজিব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে ভর্তি হন।

১৯৪৯ সালের জুনে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্টিত হলে ৪০ সদস্য বিশিষ্ট কার্যকরী কমিটিতে তিনি যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন। চলে ভাষা আন্দোলন, হন গ্রেফতার, চলে অনশন-জেল-যাপন। পরে আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকেরর চলতি দায়িত্ব গ্রহণ; ১৯৫৪ সালের ৮ মার্চ যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে প্রাদেশিক আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় ১৫ মে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক মন্ত্রীসভায় কৃষি ঋণ, সমবায় ও পল্লী উন্নয়ন মন্তী মনোনীত হন।

১৯৫৫ সালের ২১-২৩ অক্টোবর পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম আওয়ামীলীগের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে আওয়ামীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

১৯৫৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর আওয়ামীলীগ মন্ত্রীসভা গঠন করলে শেখ মুজিব বাণিজ্য,শিল্প,শ্রম ও দুর্নীতি বিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান।

পরবর্তীতে বিভিন্ন আন্দোলন, সংগ্রাম,জেলবরণ ইত্যাদির ধারাবাহিকতায় ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারী শেখ মুজিব ৬ দফা দাবিনামা উত্থাপন করেন, যার পরবর্তী কর্মকান্ড ছিল আন্দোলন, সফর ও গণ অভ্যূত্থান। পরে জেলবরণ ও মুক্তিরর পর ১৯৬৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারী রেসকোর্স ময়দানে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহুত গণ সংবর্ধনায় শেখ মুজিবকে “বঙ্গবন্ধু” উপাধীতে ভূষিত করা হয়। আন্দোলনের ধারাবাহিতায় ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ তিনি অসহযোগের ডাক দেন।৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে ঐতিহাসিক ভাষণ, ২৫ মার্চ রাত সাড়ে ১১ টায় পাকিস্তানী সেনারা নিরস্ত্র বাঙ্গালীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।রাত ১২ টা ৩০ মিনিটে স্বাধীনতা ঘোষিত হয়, রাত ১ টা ৩০ মিনিটে তিনি গ্রেফতার হন, ৩১ মার্চ বন্দি অবস্থায় পশ্চিম পাকিস্তানে নেয়া হয়।

১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর আম্রকাননের যে স্থানে স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়েছিল, ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল সে স্থানের কাছেই কুষ্টিয়ার মেহেরপুরেরর বৈদ্যনাথ তলায় প্রতিষ্টিত হয় স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার, বঙ্গবন্ধুকে রাষ্ট্রপতি ও মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক।

স্বাধীনতা যুদ্ধের নিউক্লিয়াস, প্রাণশক্তি হিসেবে কাজ করে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ডাক, ভাষণ, নেতৃত্ব ও প্রেরণা। সশরীরে অনুপস্থিত না থেকেও প্রাণসঞ্চারক হিসেবে স্বাধীন সার্বভৌম জাতির অভ্যূদয়ে কাজ করেন সত্যিকারের ‘জাতির জনক’।

স্বাধীনতা যুদ্ধের ৯ মাস যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন হয় বাংলাদেশ।

স্বাধীন দেশে বঙ্গবন্ধু ফিরে আসেন ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারী; ১২ জানুয়ারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা,সংস্কার -যোগাযোগ ইত্যাদির মাধ্যমে নবজন্ম নেয়া বাংলাদেশকে গঠনের চেষ্টা; আন্তর্জাতিক ফোরামে সম্পৃক্ত করন ইত্যাদি চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি।

১৯৭৫ সালের ৭ জুন বাকশাল গঠিত হলে শেখ মুজিব চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট দিবাগত রাতে সেনাবাহিনীর একটি বিদ্রোহী অংশ জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে (শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা ছাড়া বাকি সবাইকে) সপরিবারে হত্যা করে, যারা হলেনঃ

ফজিলাতৃন্নেসা, শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেল, শেখ আবু নাসের, সুলতানা কামাল, পারভীন জামাল,আবদুর রব সেরনিয়াবাত,শেখ ফজলুল হক, আরজু মনি, কর্ণেল জামিল, আব্দুল নঈম, বেবী সেরনিয়াবাত, আরিফ, সুকান্ত আব্দুল্লাহ ও শহীদ সেরনিয়াবাত।।

প্রতিটি দেশের জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা কিংবা জাতির জনক সকল রাজনৈতিক বিতর্ক-আলোচনার উর্ধ্বে, স্মরণাতীত কালের জন্যই বর্তমান;

যেমনি করা যায় আমাদের ক্ষেত্রেও….

 

(একজন অরাজনৈতিক ইতিহাস-পাঠক কর্তৃক সংগৃহীত, সংকলিত)..

#Sheikh Mujibur Rahman

 

————

মোঃ নাজিম উদ্দিন

১৭ মার্চ

লেখাটি লিখেছেন